August 18, 2025, 12:07 am
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
ভারত আবারও বাংলাদেশের পাটপণ্যের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এবার স্থলবন্দর দিয়ে চার ধরনের পাটজাত পণ্য আমদানির পথ সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়েছে দেশটি। তবে মুম্বাইয়ের নভোসেবা সমুদ্রবন্দর দিয়ে এসব পণ্য প্রবেশের সুযোগ রাখা হয়েছে।
সোমবার (১১ আগস্ট) ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য অধিদপ্তর এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায়, নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছে—
পাটের বস্তা ও ব্যাগ
পাটের তৈরি ব্লিসড ও আনব্লিসড বোনা কাপড়
পাটের সুতা, কর্ডেজ ও দড়ি
বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরদিন থেকেই এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে।
এর ফলে মাত্র ছয় মাসে চতুর্থবারের মতো বাংলাদেশি পণ্যের ওপর এ ধরনের বিধিনিষেধ দিল ভারত। এর আগে ১৭ মে স্থলপথে বাংলাদেশি পোশাক, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক সামগ্রী, কাঠের আসবাব, সুতা ও এর উপজাত, ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয় এবং কোমল পানীয় আমদানিতে সীমাবদ্ধতা আনে। তারও আগে, ৯ এপ্রিল কলকাতা বিমানবন্দর হয়ে তৃতীয় দেশে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানির সুবিধা প্রত্যাহার করা হয়। আর ২৭ জুন স্থলপথে কাঁচা পাট, পাটের রোল, পাটের সুতা ও বিশেষ ধরনের কাপড় আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়। নতুন সিদ্ধান্তের ফলে নিষিদ্ধ পণ্যের তালিকায় আরও চারটি পণ্য যুক্ত হলো, যা বাংলাদেশের পাটখাতের জন্য বড় আঘাত হিসেবে দেখা হচ্ছে।
পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের সচিব আব্দুর রউফ বলেন, “ভারতের এমন অশুল্ক বাধা আসতে পারে বলে আমরা আগেই ধারণা করেছিলাম। সে অনুযায়ী কিছু প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছে। দেশের অভ্যন্তরে পলিথিনের পরিবর্তে পাটের চাহিদা বাড়াতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সাধারণ পাটপণ্য রপ্তানি না করে, উচ্চমূল্যের মূল্য সংযোজিত পণ্য বিশ্বের যেকোনো বাজারে পাঠানোর পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত ভারতের এ সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের জন্য ‘সাপে বর’ প্রমাণ হতে পারে।”
বহুমুখী পাটপণ্য উৎপাদন ও রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি রাশেদুল করিম মুন্না জানান, ভারতীয় আমদানিকারকদের বেশিরভাগই কলকাতাভিত্তিক এবং স্থলপথে পণ্য পরিবহন দু’দেশের জন্যই সুবিধাজনক ছিল। তবে আগের নিষেধাজ্ঞার পর মুম্বাইয়ের নভোসেবা বন্দর হয়ে পণ্য আনা এবং সেখান থেকে কলকাতায় নেওয়ার কারণে পরিবহন ব্যয় স্বাভাবিকের তুলনায় চার গুণ বেড়েছে এবং সময়ও দ্বিগুণ লেগেছে। নতুন চার পণ্য নিষিদ্ধ হওয়ায় ভারতের বাজার ধরে রাখা আর বাণিজ্যিকভাবে সম্ভব হবে না।
তিনি আরও বলেন, “ইউরোপ ও আমেরিকার বাজারকে লক্ষ্য করে পণ্যে বৈচিত্র্য, মানোন্নয়ন ও মূল্য সংযোজনের উদ্যোগ নেওয়া গেলে কাঁচাপাট রপ্তানিতে প্রতিবন্ধকতা দীর্ঘমেয়াদে পাটশিল্পের জন্য ইতিবাচক ফল বয়ে আনতে পারে।”